স্টাফ রিপোর্টার:
শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজ বাংলাদেশের পুরান ঢাকায় অবস্থিত একটি বেসরকারি কলেজ। আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ শ্রেণীকক্ষ, গবেষণাগার, গ্রন্থাগার এবং এখানে সাধারণ কক্ষ রয়েছে।
এই কলেজটি রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে মুক্ত ফলে কলেজটি অন্যতম কলেজ হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এছাড়াও কলেজটি বর্তমানে সুসজ্জিত ক্যাম্পাসের জন্যও পুরান ঢাকার মধ্যে বিখ্যাত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে হওয়ায় শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে এই কলেজ। এছাড়াও এ প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকদের বেশিরভাগই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হওয়ায় পড়াশুনার মান নিয়ে অভিভাবকদের কোন প্রশ্ন থাকেনা।
এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে অধ্যাপক আবু নাঈম মো: রাফি একের পর এক অনিয়ম করে যাচ্ছে দেখার কেউ নাই।
রাজধানী পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বেসরকারি পর্যায়ে বাংলাদেশের প্রথম অনার্স-মাস্টার্স পাঠদানকারী প্রতিষ্ঠান শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজের অধ্যাপক আবু নাঈম মো: রাফি’র বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতার অসংখ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তদন্তে সত্য প্রমানিত হলেও রহস্যজনক কারনে তার কোন বিচার না হওয়ায় শিক্ষাঙ্গনের ভেতর চরম ক্ষোভ প্রকাশ বিরাজ করছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালে শুরুর দিকে মোঃ আব্দুর রহমান কলেজের উপাধ্যক্ষ পদে যোগদানের পর কলেজটি অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত হয়। এর পিছনে প্রধান নিয়ামক ছিলো মিস্টার ১০% খ্যাত অধ্যক্ষের কমিশন বাণিজ্য। অধ্যক্ষ তার অপছন্দের শিক্ষক-কর্মচারীদের ক্ষেত্রে ছিলেন সর্বদা খড়গহস্ত। অন্যায় না করেও বিনা দোষে শাস্তি হয়েছে অনেকের। আবার শত অপরাধ করেও বহাল তবিয়তে আছেন তার কমিশন বাণিজ্যের অংশীদাররা। এমন একজন হলেন অধ্যক্ষের সকল অপকর্মের সাথী হিসেবে পরিচিত কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবু নাঈম মোঃ রাফি।
সহযোগী অধ্যাপক আবু নাঈম মোঃ রাফি ১৯৯৮ সালে অত্র কলেজে যোগদান করেন। প্রথমে লেকচারভিত্তিক পরবর্তীতে কনসোলিডেটেড শিক্ষক হিসেবে নিযুক্তি হয়। তিনি ২০০৩ সালে তৎকালীন অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদকে বিতাড়নে অধ্যাপিকা কামরুন নাহার আহমেদের সারথী হিসেবে গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করেন।
পুরস্কার হিসেবে ২০০৪ সালে তার স্থায়ী নিয়োগ। এরপর তিনি হয়ে উঠেন বেপরোয়া আর লাগামহীন। তৎকালীন প্রশাসনের মদদে ৮/২/বি, নবাব বাগিচা পরবর্তীতে ২৮/২/এ, হোসেনি দালান রোডে রমরমা কোচিং বাণিজ্য শুরু করেন। কোচিং সেন্টারে একাধিকবার অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয়ে গুণেছেন লক্ষ লক্ষ টাকার জরিমানা। ২০০৭ সালে কলেজের এমপিও সারেন্ডারের অন্যতম সংগঠক তিনি। হুমকি-ধামকি, ভয়-ভীতি দেখিয়ে প্রাক্তন অধ্যক্ষ কামরুন নাহারের মদদে তরুণ শিক্ষক-কর্মচারীদেরকে এমপিও সারেন্ডার পত্রে স্বাক্ষর করাতে বাধ্য করতেন।
২০০৯ সালে পট পরিবর্তনের পর শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার, বিভাজন ও দ্বন্দ্ব সৃষ্টি, বিশেষ করে আর্থিক কমিটিতে যেসকল শিক্ষক অন্তর্ভূক্ত হতেন তাদের রিুদ্ধে দলগতভাবে তারা ভয়ংকর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হতেন। এছাড়া কোচিং বাণিজ্য, বাউবি ও নিয়োগ পরীক্ষার হল কন্টাক্ট ও প্রশ্নপত্র ফাঁস, নিজের এবং পছন্দের পাবলিকেশন্সের বই বিক্রয়, অন্য লেখকের বই বিক্রয়ের ক্ষেত্রে বাধাঁ প্রদানসহ নানা অপকর্ম ছিল তাদের অন্যতম কাজ। ২০১৫ সালে পুরাতন সারথী আব্দুর রহমান স্থায়ীভাবে অধ্যক্ষ নিযুক্ত হলে স্বরূপে ফিরে আসেন আবু নাঈম মোঃ রাফি। হয়ে উঠেন অধ্যক্ষের কমিশন বাণিজ্যের অন্যতম মিডিয়া ও অংশীদার। ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল, এসময় তিনি শিক্ষক প্রতিনিধি ও শিক্ষক পরিষদের সেক্রেটারি ছিলেন। এর সুবাদে কলেজের সকল আর্থিক কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি। ২০১৬-২০১৭ থেকে ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে কলেজের ভবন নির্মাণ ও উন্নয়ন বাবদ খরচ হয় প্রায় ১কোটি ২৪লক্ষ ১৯হাজার ১০৪ টাকা। যেখানে ৯০ লক্ষ টাকা বরাদ্দের বিপরীতে ৩৬ লক্ষ ৭৯ হাজার একশত চার টাকা বেশি খরচ দেখান। বিভাগীয় কোনো শিক্ষক বা বিভাগীয় প্রধানের কোনোরকম সম্পৃক্ততা ছাড়াই প্রজেক্ট কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে আবু নাঈম মোঃ রাফি এককভাবে এ কাজ করেন। নিম্নমানের দ্রব্য সামগ্রী সরবরাহ, পরিমাপে বেশি দেখানো এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত খরচ দেখিয়ে এই খাত থেকে হাতিয়ে নেন লক্ষ লক্ষ টাকা। শুধু টাইলস এর মাপ বেশি দেখিয়ে ৩ লাখ ৬০ হাজার ৫৭৩ টাকা আত্মসাৎ করেন। এর সাথে যুক্ত ছিলো কলেজের পুরাতন দরজা জানালা বিক্রির টাকা। সেই সময় বিভাগীয় উন্নয়নের নানাবিধ অপকর্মের বিষয়ে বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মোঃ মনিরুজ্জামান ও বিবিএ (প্রফেশনাল)’র বিভাগীয় প্রধান ইসমাত জাহান তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
তার আসল কারিশমা দেখা যায়, ২০১৯ সালে কলেজের জন্য কেরাণীগঞ্জের শাক্তা ইউনিয়নে প্রায় ২০ফুট পানির নিচে ৪৩১.৬৮ শতাংশ কলেজের নামে জমি ক্রয়ের ক্ষেত্রে। অধ্যক্ষ আব্দুর রহমানের মদদে তার আত্মীয় ও ব্যবসায়ী পার্টনার সারা রিয়েল এস্টেট (অনিবন্ধিত) এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর শাহ আলমের যোগসাজসে হাতিয়ে নেন কোটি কোটি টাকা। ২ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা শতাংশ প্রতি ‘সারা রিয়েল এস্টেট’ এর সাথে চুক্তিবদ্ধ হলেও ৪৭ শতাংশ জমি ছাড়া বাকি সব জমি ক্রয় করা হয় সরাসরি কৃষকদের নিকট হতে। অথচ সারা রিয়েল এস্টেটকে নগদ পরিশোধ করা হয় ১কোটি ১৩ লক্ষ টাকা।
জমির মূল্য পে-অর্ডার ও ব্যাংক চেকের মাধ্যমে পরিশোধের বিধান থাকলেও আবু নাঈম মোঃ রাফি ও অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুর রহমানের নামে চেক ইস্যু করে মোট ৬,২৬,৭১,৩৬৯/= (৬কোটি ২৪লক্ষ ৭১ হাজার ৩৬৯ টাকা উঠিয়ে নগদ পরিশোধ করেন। শুধু তাই নয় দলিল টেম্পারিংয়ের অভিযোগও আছে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
কলেজে বিদ্যুতের সাব-স্টেশন স্থাপনের ক্ষেত্রে দুর্নীতি করার উদ্দেশ্যে দরপত্র অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি থেকে ক্রয় করলে অধিক ব্যয় হবে এই অজুহাতে “অফারিং লেটার” এর মাধ্যমে তৎকালীন শিক্ষক প্রতিনিধি আবু নাঈম মোঃ রাফি’র পূর্ব পরিচিত এবং তার প্রোএকটিভ হাসপাতালের সাবস্টেশন সরবরাহকারী অখ্যাত প্রতিষ্ঠান কুইক পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড মাধ্যমে কাজ সম্পন্ন করেন। ২০১৯ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে দেশের সকল মিডিয়ায় আবু নাঈম মোঃ রাফি গংদের এসব অপরাধের চিত্র উঠে আসে। এছাড়া ২০২০ সালের ডিআইএ ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়র তদন্ত রিপোর্টেও তার অপরাধচিত্র উঠে এসেছে।
ঐ সময় তার বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য অনেক শিক্ষককে প্রাণনাশের হুমকীও দেন তিনি। মামলাবাজ সিন্ডিকেটের একজন সক্রিয় সদস্য হওয়ার সুবাদে একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের সাথে সংশ্লিষ্ট তিনি। তার এসকল অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য তৎকালীন অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুর রহমান তার বিরুদ্ধে ২১.১১.২০১৯ তারিখে কেরাণীগঞ্জ মডেল থানা এবং ১৪.১২.২০১৯ তারিখে বংশাল থানায় জিডি, ২১.১১.২০১৯ তারিখে দুর্নীতি দমন কমিশন, ১১.১১.২০১৯ তারিখে সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন।
আবু নাঈম মোঃ রাফি গংদের বিরুদ্ধে বর্তমান অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) আসমা পারভীন ২১.১২.২০১৯ তারিখে বংশাল থানায় জিডি (নং: ১০১৪) করেন।
৫ আগস্টের পর বিতাড়িত অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) আসমা পারভীন ও সহযোগী অধ্যাপক বিপ্লবী শিখা (যৌথভাবে) ০৩.১১.২০১৯ তারিখে দুর্নীতি দমন কমিশন এবং বিপ্লবী শিখা এককভাবে ২২.১০২০১৯ তারিখে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। ২০.১০.২০১৯ তারিখে আবু নাঈম মোঃ রাফি গংদের বিরুদ্ধে শিক্ষক-কর্মচারীরা সম্মিলিতভাবে অনাস্থাজ্ঞাপন।
আবু নাঈম মোঃ রাফির কলেজের উপস্থিতি এবং হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরের কোনো মিল নেই। তিনি কলেজের ক্লাস না নিলেও প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়’না। ক্লাস না নেয়া, ক্লাসে শিক্ষার্থীদের দিয়ে ওএমআর পূরণ করানো, কলেজের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ড, কলেজের বাইরে প্রো-একটিভ হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন, ব্যাপকভাবে দুর্নীতি, কলেজের অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অপরাধের জন্য তিনি প্রশাসনের তথাকথিত শো’কজের মুখোমুখি হয়েছেন অনেকবার। তার শো’কজের প্রতিটি জবাব ছিল কর্তৃপক্ষের প্রতি অঙ্গুলি নির্দেশ ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ। নিজেদের পদোন্নতি ও কলেজ থেকে অনৈতিক আর্থিক-অনার্থিক সুবিধা গ্রহণের লক্ষ্যে নিজেরাই কমিটি গঠন করেন, পদোন্নতি নীতিমালা তৈরি করেন। এই রাফি গং কলেজে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য ১৮.০৩.২০১৮ তারিখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদনপত্রও জমা দেন।
২০২০ সালের ডিআইএ ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্টে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, আবু নাঈম মোঃ রাফি গং কলেজের অস্থিতিশীলতার জন্য দায়ী এবং জমি ক্রয়ে দুর্নীতির ক্ষেত্রে ৫ সদস্য বিশিষ্ট উচ্চতর তদন্ত কমিটি গঠন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য।
কিন্তু অদ্যাবধি তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বরং, উল্টো তাকে পুরস্কৃত করেছেন অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান। এমপিও তে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে “তার বিরুদ্ধে কলেজের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের কোনো অভিযোগ নেই” এই মর্মে প্রত্যয়নপত্রও দিয়েছেন অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান। অথচ ঐ পদোন্নতি কমিটিতে আব্দুর রহমান একজন সদস্য ছিলেন । বর্তমান প্রশাসনও পূর্বের ধারাবাহিকতায় তাকে ১জুন-২০২৪ তারিখ হতে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দিয়েছেন। অথচ তার বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অডিট ও আইন শাখায় তদন্ত চলমান রয়েছে।
সাধারণত তার কব্জায় নেই এমন ধরণের শিক্ষক-কর্মচারীদেরকে অনেক সময় মিথ্যা অভিযোগে শো’কজ দিয়েই সাময়িক বরখাস্ত করতে কুণ্ঠাবোধ করেননি অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান। তিনি রাফির বিরুদ্ধে থানায় একাধিক জিডি করেছেন, নানাবিধ অপরাধের জন্য শো’কজ দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট নানা দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছেন। যা ছিল সবকিছু লোক দেখানো নাটক মঞ্চস্থ করা। প্রকৃতপক্ষে কলেজের অর্থ লুটপাট সিন্ডিকেটের মূল হোতা অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুর রহমন আর তার সারথীদের অন্যতম এই আবু নাঈম মোঃ রাফি।
জানা যায়, এ কলেজের বিবিএ ডিপার্টমেন্টের সাবেক কো-অর্ডিনেটর মহিউদ্দিনের আত্মসাৎকৃত ১৪ লক্ষ টাকা ফেরত দেয়ার বিষয়ে অধ্যক্ষের কমিশন বাণিজ্যের মধ্যস্থতাকারী মহিউদ্দিনের আত্মীয় এই আবু নাঈম মোঃ রাফি। অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুর রহমান ওরফে নুর মোহাম্মদ এর কমিশন বাণিজ্যের কারনে ভাইভা ও টার্ম পেপারের নামে ২০২০ সালে হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে অবৈধভাবে ১৩০০ টাকা আদায়ের ঘটনাও ধামাচাপা পড়ে গেছে। এই ঘটনার বিচারতো হয়নি, বরং হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকদের মিথ্যা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাঃ বদরুল ইসলাম, যুগান্তরের সিনিয়র স্টাফ রিপোটার মোস্তাক আহমেদ ও মানবজমিনের সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার ফরিদ আহমেদের বিরুদ্ধে দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
আবু নাঈম মোঃ রাফি গংদের যোগসাজসে ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাঃ বদরুল ইসলামকে অপদস্ত করার লক্ষ্যে মিথ্যা মামলা দায়ের ও চাকরির ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টির জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে অভিযোগও দায়ের করেন।
শিক্ষক আবু নাঈম রাফি, বাদল চন্দ্র অপু শেখ বোরহান উদ্দিন কলেজে এমন একটি আতঙ্কের নাম তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তাকে চাকুরিচ্যুতি, মিথ্যা মামলা ফাঁসানো, সন্ত্রাসী দিয়ে হুমকিসহ নানাবিধ অত্যাচার করে থাকেন। অধ্যাপক মোঃ বদরুল ইসলাম তাদের কোচিং বাণিজ্য নিয়ে কথা বলাতে ২০০৫ সালে তাকে প্রথম চাকরিচ্যুতির চেষ্টা করেন। ২০০৭ সালে এমপিও সারেন্ডার নিয়ে উত্তাল আন্দোলনে তাকে কলেজে প্রবেশে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। ২০১৮সালে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ভাইভার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিরে মাউশি কর্তৃক তদন্ত কমিটি গঠন হয় এবং তাদের দুর্নীতি প্রমাণিত হয়। কিন্তু খুনী হাসিনার পেটুয়া ফ্যাসিস্ট-প্রশাসন তাদের বিচার না করে অধ্যাপক বদরুল ইসলামের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে চাকরিচ্যুতির চেষ্টা করেন। ২০২০ সালে জমি ক্রয় ও উন্নয়নের নামে ফান্ড লুটপাট এর বিরুদ্ধে কথা বলায় আবু নাঈম রাফি গং অধ্যাপক বদরুল ইসলামের নামে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন, যা সিআইডি ও ডিবি তদন্ত প্রতিবেদনে প্রকৃত সত্য ঘটনা উঠে এসেছে।
এদিকে দোসরদের রক্ষা করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অমান্য করে ৩০.০৩.২০২২ তারিখে অধ্যক্ষ আব্দুর রহমানের চাকুরির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও বিগত দুই বছর (৩১.০৩.২০২২ থেকে ৩০.০৩.২০২৪ পর্যন্ত) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তাকে শুধু মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক হিসেবে চাকুরির মেয়াদ বৃদ্ধি করা সত্ত্বেও অবৈধভাবে অধ্যক্ষের চেয়ার আঁকড়ে ধরে ছিলেন।
একজন আদর্শবান শিক্ষকের যা যা গুণাবলী থাকে সবই তার মধ্যে আছেন।
২০১২ সালে শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে, যা ২০১৯ সালে হাইকোর্টের নির্দেশে গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। এই নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো শিক্ষক নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কোচিং করাতে পারবেন না। অন্য প্রতিষ্ঠানের সর্বাধিক ১০ জন শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়ানোর অনুমতি থাকলেও, তা প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে জানাতে হবে।